ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সম্পদ বাজেয়াপ্তের আদেশ, দুটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড

শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রায় শুনছেন। ছবি: সংগৃহীত

স্টাফ রিপোর্টার │ দৈনিক যশোর ২৪

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল–এর সমস্ত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১। জুলাই ২০২৪–এর গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি মামলার মধ্যে দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড এবং একটি অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রবিবার দুপুরে ঘোষিত ৪৫৩ পৃষ্ঠার রায়ে শহীদ পরিবারকে ক্ষতিপূরণ, আহতদের পুনর্বাসন এবং সম্পদ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতের বাইরে বিক্ষোভকারীদের উপস্থিতিতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

রায়ের বিশদ বিবরণ

রায়ে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান জনতার উপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার এবং হত্যার নির্দেশ দিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন। এই অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করেছে।

সাবেক পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন, যিনি রাজসাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ৫ বছরের কারাদণ্ড পান।

আদালত আরও জানিয়েছে, উপস্থাপিত সাক্ষ্যপ্রমাণ, অডিও ও ভিডিও আন্তর্জাতিক মান পূরণ করে। বিশ্বের যেকোনো আদালতেও এই প্রমাণগুলো গ্রহণযোগ্য হবে।

প্রতিক্রিয়া ও পরিস্থিতি

রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি প্রাঙ্গণসহ বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায় সরাসরি সম্প্রচার দেখানো হয়। শিক্ষার্থীরা “ফাঁসি চাই, খুনি হাসিনার ফাঁসি চাই” স্লোগান দেন।

ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রায় ১৫ হাজার পুলিশ সদস্য মোতায়েন ছিলেন। সেনাবাহিনী, র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) এবং এপিবিএনকে নিয়োগ করা হয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য।

আসামিদের বর্তমান অবস্থান

• শেখ হাসিনা – বর্তমানে ভারতে
• আসাদুজ্জামান খান কামাল – ভারতে
• চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুন – রাজসাক্ষী, ৫ বছরের সাজাপ্রাপ্ত

সরকার জানিয়েছে, তাদের প্রত্যর্পণের জন্য ভারতকে পুনরায় চিঠি পাঠানো হবে।

রায়ের গুরুত্ব

অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছেন, এই রায় শহীদদের প্রতি রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা পূরণ করেছে।
এ রায় ভবিষ্যতের জন্য একটি বার্তা, যা নিশ্চিত করে—বাংলাদেশে ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত।

📌 আরও পড়ুন:

সব খবর দেখুন →