Header Ads Widget

যশোর সদরের প্রতিটি মন্দিরে শারদীয় শুভেচ্ছা উপহার বিতরণ করছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা

শারদীয় দুর্গাপূজা ও সামাজিক সম্প্রীতি

বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। প্রতিবছর আশ্বিন মাসে সারা দেশে অনুষ্ঠিত হয় এই পূজা। কেবল ধর্মীয় আচার নয়, দুর্গাপূজা এখন বাঙালি সংস্কৃতির অংশ হয়ে উঠেছে। পূজা মানেই আনন্দ, মিলনমেলা এবং সামাজিক সম্প্রীতির বন্ধন দৃঢ় করা।

এই উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক, সামাজিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে। এ বছর যশোর সদরের প্রতিটি মন্দিরে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা শারদীয় শুভেচ্ছা উপহার বিতরণ শুরু করেছেন।

যশোরে মন্দিরে শারদীয় শুভেচ্ছা উপহার বিতরণ
শারদীয় শুভেচ্ছা উপহার বিতরণ করছে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের পক্ষ থেকে দুই দিনব্যাপী এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়। এতে যশোর সদর উপজেলার মোট ১৬৬টি মন্দির অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

প্রথম দিনের কার্যক্রম: ৮১টি মন্দিরে শুভেচ্ছা পৌঁছে

শুক্রবার সকাল থেকেই যশোর সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মন্দিরে উপহার পৌঁছে দেওয়া শুরু হয়। প্রথম দিনে মোট ৮১টি মন্দিরে এই শুভেচ্ছা উপহার পৌঁছে দেওয়া হয়।

প্রথম দিনে যেসব ইউনিয়নের মন্দিরে উপহার পৌঁছায়

  1. চাঁচড়া ইউনিয়ন
  2. রামনগর ইউনিয়ন
  3. ফতেপুর ইউনিয়ন
  4. নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন
  5. কচুয়া ইউনিয়ন
  6. বসুন্দিয়া ইউনিয়ন
  7. ইছালী ইউনিয়ন
  8. লেবুতলা ইউনিয়ন
  9. কাশিমপুর ইউনিয়ন
  10. নওয়াপাড়া ইউনিয়ন

প্রত্যেক মন্দিরে বিএনপির নেতাকর্মীরা স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দের হাতে উপহার সামগ্রী তুলে দেন।

দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম: বাকি ৮৫ মন্দিরে উপহার বিতরণ

শনিবার কার্যক্রমের দ্বিতীয় দিনে উপহার বিতরণ করা হয় সদর উপজেলার বাকি ৮৫টি মন্দিরে।

দ্বিতীয় দিনে উপহার বিতরণের স্থানসমূহ

  1. হৈবতপুর ইউনিয়ন

  2. চুড়ামনকাঠি ইউনিয়ন

  3. দেয়াড়া ইউনিয়ন

  4. আরবপুর ইউনিয়ন

  5. যশোর পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ড

এই দিনেও একইভাবে নেতাকর্মীরা অংশ নেন এবং পূজার আনন্দে অংশীদার হন।

নেতৃত্ব ও সক্রিয় অংশগ্রহণকারীরা

পুরো কর্মসূচির নেতৃত্ব দেন যশোর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন—

  1. সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আঞ্জারুল হক খোকন

  2. সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক

  3. আশরাফুজ্জামান মিঠু

  4. সহসভাপতি শাহজালাল

  5. মীর নুর ইমাম

  6. রেজাউল ইসলাম কামাল

এছাড়া বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব নির্মল কুমার বিট, যশোর জেলার সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক অলোক ঘোষ, অ্যাডভোকেট সুদীপ্ত কুমার ঘোষ, সুব্রত ঘোষ শুভ, বাধন হোড়সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সামাজিক সম্প্রীতির বার্তা

এ ধরনের উদ্যোগ কেবল উপহার বিতরণেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি সামাজিক সম্প্রীতির প্রতীক।

বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ একটি বহুমাত্রিক সমাজ যেখানে হিন্দু-মুসলিমসহ সব ধর্মের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে একসাথে বসবাস করছে। রাজনৈতিক দলগুলোর এ ধরনের কর্মসূচি এই সহাবস্থানকে আরও শক্তিশালী করে।

স্থানীয় প্রতিক্রিয়া: আনন্দে মুখরিত পূজামণ্ডপ

মন্দির কমিটির নেতারা বলেন,

“এমন উদ্যোগ আমাদের উৎসবকে আরও আনন্দমুখর করে তোলে। পূজা শুধু হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য নয়, বরং সবার অংশগ্রহণে তা জাতীয় উৎসবের মতো হয়ে ওঠে।”

স্থানীয় পূজারীরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে জানিয়েছেন, রাজনৈতিক নেতাদের এমন সহযোগিতা তাদের উৎসবকে আরও প্রাণবন্ত করে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

এই উদ্যোগ কেবল সামাজিক দায়িত্ব পালনের উদাহরণ নয়, বরং রাজনৈতিক তাৎপর্যও বহন করে।

প্রথম আলো এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো প্রায়ই ধর্মীয় উৎসবগুলোতে অংশ নেয়, যাতে তারা সামাজিক সম্প্রীতি বজায় রাখার পাশাপাশি রাজনৈতিক বার্তাও পৌঁছে দিতে পারে।

বিএনপির এ আয়োজনকেও অনেকে সেই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখছেন।

যশোরের পূজার ঐতিহ্য

যশোর জেলা সবসময় দুর্গাপূজার বর্ণিল আয়োজনের জন্য পরিচিত। সদর উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় শতাধিক পূজামণ্ডপ বসে। এখানে পূজা মানেই মিলনমেলা।

BDNews24-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যশোর ও খুলনা অঞ্চলে দুর্গাপূজা সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে।

উপহার বিতরণের তাৎপর্য

  1. ধর্মীয় সহাবস্থান: ভিন্ন ধর্মের মানুষের পাশে দাঁড়ানো সম্প্রীতি বাড়ায়।

  2. রাজনৈতিক সদিচ্ছা: এটি রাজনৈতিক নেতাদের জনগণের কাছে আরও গ্রহণযোগ্য করে তোলে।

  3. মানবিক উদ্যোগ: উপহার সামগ্রী পূজার আনন্দকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়।

  4. সামাজিক দায়বদ্ধতা: রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব শুধু রাজনীতি নয়, বরং সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করা।

উপসংহার

যশোর সদরের প্রতিটি মন্দিরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের এ উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এটি কেবল হিন্দু সম্প্রদায়ের পূজার আনন্দ বাড়ায়নি, বরং সামগ্রিকভাবে সামাজিক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।

রাজনীতি যাই থাকুক, ধর্মীয় উৎসবে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই প্রকৃত মানবিকতা।

প্রশ্নোত্তর (Q&A)

প্রশ্ন ১: যশোর সদরে কয়টি মন্দিরে উপহার বিতরণ করা হয়েছে?
উত্তর: মোট ১৬৬টি মন্দিরে।

প্রশ্ন ২: এই কার্যক্রম কার পক্ষ থেকে হয়েছে?
উত্তর: বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিতের পক্ষ থেকে।

প্রশ্ন ৩: উপহার বিতরণে নেতৃত্ব দিয়েছেন কে?
উত্তর: জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু।

প্রশ্ন ৪: প্রথম দিনে কয়টি ইউনিয়নে উপহার বিতরণ হয়?
উত্তর: ১০ ইউনিয়নের ৮১টি মন্দিরে।

প্রশ্ন ৫: এ ধরনের কর্মসূচির তাৎপর্য কী?
উত্তর: এটি ধর্মীয় সম্প্রীতি, মানবিকতা ও রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রতীক।

যশোরে ডিবি পুলিশের অভিযান

বিজিবি অভিযানে সোনা পাচারকারী আটক

অভয়নগরে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটক

📌 আরও পড়ুন:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ