![]() |
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের রিমান্ড শুনানি। ছবি: সংগৃহীত |
বাংলাদেশের রাজনীতিতে ছাত্র আন্দোলনের স্থান সবসময় বিশেষ। বিশেষ করে রাজধানীর শাহবাগ—যা গণআন্দোলন ও সামাজিক সচেতনতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঘটে এক মর্মান্তিক ঘটনা, যা পুরো দেশের মনোযোগ আকর্ষণ করে।
শাহবাগের আন্দোলন চরম উত্তেজনার মধ্য দিয়ে এগোচ্ছিল। ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ দাবির মাঝে হঠাৎ ঘটে যায় গুলির ঘটনা। সাধারণ মানুষ, ঝুট ব্যবসায়ী মো. মনির, সেই সংঘর্ষে প্রাণ হারান। ঘটনাটি শুধু তার পরিবারের জন্য নয়, পুরো সমাজের জন্য শোকের।
নিহতের পরিবার ও রাষ্ট্রপক্ষ তখনই ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা শুরু করে। নিহত মো. মনিরের স্ত্রী রোজিনা আক্তার ২০২৫ সালের ১৪ মার্চ শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামি তালিকায় উঠে আসে প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, সাবেক খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম।
২০২৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এই ঘটনায় সামাজিক, রাজনৈতিক এবং আইনগত বিষয়গুলো দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
ঘটনাপ্রবাহ ও তদন্ত
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শাহবাগ থানার চাঁনখারপুল এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন মো. মনির। দুপুরে আন্দোলনের সময় গুলির ঘটনা ঘটে।
মো. মনির স্থানীয় ঝুট ব্যবসায়ী হলেও সামাজিক সচেতনতায় সক্রিয়। সে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করছিল। পুলিশ ও সাক্ষীদের বর্ণনা অনুযায়ী, ঘটনাস্থলে উপস্থিত বেশ কিছু ব্যক্তি এবং প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে সংঘর্ষের জেরে গুলি ছোড়া হয়।
📌 আরও পড়ুন:
পরবর্তীতে নিহতের স্ত্রী রোজিনা আক্তার শাহবাগ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় উল্লেখ করা হয়, প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের অংশগ্রহণ এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে প্রভাব ফেলেছে।
মামলায় মোট ৩৫১ জনকে নামীয় এবং ৫০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। সাবেক মন্ত্রী কামরুল ইসলাম ৭ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি হিসেবে নাম থাকে।
সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামের গ্রেপ্তার ও রিমান্ড
২০২৪ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলামকে। পরে একাধিক দফা রিমান্ডে নেওয়া হয়।
২০২৫ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদেকুর রহমান ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক মাইনুল ইসলাম খান পুলক ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছিলেন।
অপরদিকে আসামিপক্ষে আইনজীবী আফতাব আহমেদ রিমান্ড বাতিল ও জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রভাব
শাহবাগে ঘটে যাওয়া এই হত্যাকাণ্ড দেশের ছাত্র সমাজের মধ্যে ব্যাপক শোক ও উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। অনেকেই সরকারের প্রতি প্রশ্ন তুলেছেন—আন্দোলন ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কতটা নিশ্চিত হচ্ছে।
একই সময়ে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
ঘটনার বিশ্লেষণ ও শিক্ষা
১. সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা সর্বপ্রথম: আন্দোলন শান্তিপূর্ণ হলেও বাহ্যিক হিংসা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে।
২. নির্দিষ্ট দায়বদ্ধতার অভাব: ক্ষমতার অপব্যবহার সাধারণ মানুষের জন্য বিপজ্জনক।
৩. আইনের শাসন নিশ্চিত করা জরুরি: বিচার প্রক্রিয়া যেন দ্রুত ও সুষ্ঠু হয়।
শাহবাগের ঘটনার মতোই সম্প্রতি যশোরের মুড়লী মোড় এলাকায় বড় ধরনের সোনা পাচারের ঘটনা ঘটে:যশোরের মুড়লী মোড় এলাকায় বিজিবির অভিযানে ৫টি সোনার বার উদ্ধার
অভয়নগরে পুলিশের অভিযানে ধরা পড়েছিল এক সন্ত্রাসী, যা এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করে:
অভয়নগরে পুলিশের সাড়াশি অভিযানে অস্ত্রসহ সন্ত্রাসী আটক
মন্দিরে শারদীয় উপহার বিতরণ নিয়ে রাজনৈতিক আলোচনাও ছিল উল্লেখযোগ্য:
যশোর সদরের প্রতিটি মন্দিরে শারদীয় শুভেচ্ছা উপহার বিতরণ করছে বিএনপি
আরও জানুন: যশোরের সর্বশেষ খবর
প্রশ্ন ও উত্তর (Q&A)
প্রশ্ন ১: শাহবাগে ঘটেছে কি ধরনের আন্দোলন?
উত্তর: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, যেখানে শিক্ষার্থীরা সামাজিক ন্যায় ও সমতার দাবি জানাচ্ছিল।
প্রশ্ন ২: মো. মনির কে ছিলেন?
উত্তর: তিনি একজন ঝুট ব্যবসায়ী, সমাজ সচেতন ব্যক্তি, এবং আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী।
প্রশ্ন ৩: মামলার আসামি কারা?
উত্তর: মোট ৩৫১ জন নামীয় এবং ৫০০ জন অজ্ঞাতনামা; সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ৭ নম্বর আসামি।
প্রশ্ন ৪: রিমান্ড কত দিনের মঞ্জুর হলো?
উত্তর: আদালত ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
প্রশ্ন ৫: শিক্ষণীয় দিক কী?
উত্তর: আন্দোলনের মধ্যে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা ও আইনের শাসন নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
0 মন্তব্যসমূহ