Header Ads Widget

অভয়নগরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত যুবক শামীম শেখের মৃত্যু | দৈনিক যশোর 24

যশোরের অভয়নগরে আবারও ঘটল রক্তাক্ত ঘটনা। সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে মৃত্যুবরণ করলেন ২০ বছরের তরুণ শামীম শেখ। বুধবার রাতে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ হত্যাকাণ্ডে এলাকায় শোক ও আতঙ্ক নেমে এসেছে।

অভয়নগরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত যুবক শামীম শেখের খবর - দৈনিক যশোর 24
অভয়নগরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত যুবক শামীম শেখের খবর - দৈনিক যশোর 24ছবি: সংগৃহীত

অভয়নগরে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এক নৃশংস ঘটনার খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন ২০ বছরের তরুণ শামীম শেখ। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনা স্থানীয়ভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এবং এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ

বুধবার রাত ১০টার দিকে শুভরাড়া ইউনিয়নের আশফাক উদ্দিন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ঘটে যায় এ ভয়াবহ ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ওই সময় শামীম শেখ ও তার কয়েকজন বন্ধু বিদ্যালয়ের সিঁড়িতে বসে মোবাইল ফোনে গেম খেলছিলেন। হঠাৎ করেই মুখোশধারী সন্ত্রাসীরা এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে।

একটি গুলি সরাসরি শামীম শেখের কপালের বাম পাশে বিদ্ধ হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা দ্রুত তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকায় পাঠান। পরদিন রাতে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

স্থানীয় সূত্রের তথ্য

স্থানীয় গ্রামবাসীর দাবি, এই ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত ছিল। সম্প্রতি এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ বাড়ছিল। তারই জের ধরে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপ এই হামলা চালিয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

পুলিশের বক্তব্য

অভয়নগর থানার ওসি মো. রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন—

"আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে নিহত শামীম শেখ চরমপন্থী দলের সাথে জড়িত ছিল। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এ ঘটনা ঘটেছে। তদন্ত চলছে, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

👉 ঢাকা পোস্ট সূত্রে জানা যায়, এ ধরনের সংঘর্ষ যশোর অঞ্চলে প্রায়ই ঘটে থাকে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারই মূল কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

পরিবার ও গ্রামবাসীর প্রতিক্রিয়া

শামীম শেখের পরিবার ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেছেন। তারা জানিয়েছেন, শামীম কখনো সন্ত্রাসী দলের সদস্য ছিল না, বরং সাধারণ গ্রামের ছেলে হিসেবে বেড়ে উঠছিল। তবে পুলিশ যে মন্তব্য করেছে তা পরিবার মানতে নারাজ।

গ্রামবাসী জানিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনায় গ্রামে ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। রাতে অনেকেই ঘর থেকে বের হতে ভয় পাচ্ছেন।

অভয়নগরে সন্ত্রাসীদের আধিপত্য: একটি পটভূমি

অভয়নগর ও যশোর অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ চলে আসছে। রাজনৈতিক বিরোধ, জমি দখল, চাঁদাবাজি ইত্যাদি কারণে প্রায়ই এ ধরনের রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটে থাকে।

👉 বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সক্রিয় কয়েকটি চরমপন্থী গ্রুপ স্থানীয়ভাবে দীর্ঘদিন ধরে ত্রাস সৃষ্টি করে আসছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চ্যালেঞ্জ

যশোর, খুলনা ও আশেপাশের এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চরমপন্থী সন্ত্রাসীদের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালালেও সন্ত্রাসীরা নতুন কৌশলে আবারও সংগঠিত হয়ে পড়ে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দাবি, এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান সম্ভব কেবলমাত্র সামাজিক সচেতনতা, শিক্ষা বিস্তার এবং তরুণ প্রজন্মকে সঠিক পথে এগিয়ে নেওয়ার মাধ্যমে।

ঘটনাটির সামাজিক প্রভাব

স্থানীয় জনগণের মাঝে ভীতি সৃষ্টি
তরুণ সমাজে হতাশা
অভিভাবকদের উদ্বেগ বেড়েছে
এলাকার স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা

উপসংহার

অভয়নগরের এ হত্যাকাণ্ড প্রমাণ করে যে, সন্ত্রাসবাদ ও আধিপত্য বিস্তারের রাজনীতি এখনও দেশের অনেক অঞ্চলে ভয়ঙ্কর বাস্তবতা। একজন ২০ বছরের তরুণের অকাল মৃত্যু শুধু একটি পরিবারকে শোকসাগরে ভাসায়নি, বরং সমাজের জন্যও সতর্কবার্তা হয়ে এসেছে। এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন সচেতনতা, কঠোর আইন প্রয়োগ এবং সন্ত্রাসবিরোধী দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ।


প্রশ্নোত্তর (FAQ)

প্রশ্ন ১: শামীম শেখকে কেন হত্যা করা হলো?
উত্তর: প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে আধিপত্য বিস্তারকেন্দ্রিক বিরোধের জের ধরেই এই হামলা চালানো হয়েছে।

প্রশ্ন ২: নিহত শামীম কি সত্যিই চরমপন্থী দলের সদস্য ছিলেন?
উত্তর: পুলিশ জানিয়েছে তিনি চরমপন্থীদের সাথে যুক্ত ছিলেন, তবে পরিবার তা অস্বীকার করছে।

প্রশ্ন ৩: এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত?
উত্তর: আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারি, সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, এবং তরুণদের সঠিক পথে এগিয়ে দেওয়া জরুরি।

প্রশ্ন ৪: এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে কি?
উত্তর: হ্যাঁ, ঘটনার পর থেকেই পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।

📌 আরও পড়ুন:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ